Monday, July 27, 2015

চাকমা ভাষাচর্চা কোন পথে

পার্বত্য চট্টগ্রামে ১১টি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার রয়েছে নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি। ভাষিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে সংখ্যাগতভাবে এ দেশে বাংলা ভাষার পরে চাকমা ভাষার অবস্থান (২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, চাকমা জনগোষ্ঠী চার লাখ ৪৪ হাজার)। ভাষাগত দিক থেকে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের ভাষা অনেকটা কাছাকাছি। অনেক ভাষাবিদ তঞ্চঙ্গ্যা ভাষাকে চাকমা ভাষার উপভাষা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে একটু গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে এ দুটি ভাষার মধ্যে উচ্চারণগত ভিন্নতা ছাড়া তেমন কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। পার্বত্য চট্টগ্রামে ১১টি ভিন্ন ভাষাভাষী জাতির মধ্যে চাকমারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। চাকমাদের আবাসস্থল পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়াও ভারতের মিজোরাম, অরুণাচল, ত্রিপুরা, আসাম ও মিয়ানমারে রয়েছে। সমগ্র পৃথিবীতে প্রায় ছয় লাখ লোক চাকমা ভাষায় কথা বলে। মূলত চাকমা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় বৃহৎ ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চাকমা ও মারমাদের ছাড়া আর কোনো গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষার বর্ণমালা নেই।
চাকমা ভাষার লেখনরীতি ‘মন খমে’র অনুরূপ। চাকমাদের নিজস্ব বর্ণমালা আছে, তবে এর সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। যেমন, ড. জি এ গ্রিয়ারসন তাঁর ‘লিঙ্গুয়েস্টিক সার্ভে অব ইন্ডিয়া’ গবেষণায় (১৯০৩) চাকমা ভাষায় ৩৩টি বর্ণমালার কথা উল্লেখ করেছেন। সতীশ চন্দ্র ঘোষ তাঁর চাকমা জাতি (১৯০৯) গ্রন্থে ৩৭টি বর্ণমালার কথা বলেছেন। অন্যদিকে, নোয়ারাম চাকমা ১৯৫৯ সালে তাঁর চাকমা বর্ণমালার পত্তম শিক্ষা নামক শিশুপাঠ্য বইয়ে ৩৯টি বর্ণমালার কথা উল্লেখ করেছেন। বর্তমানে চাকমা ভাষায় ৩৩টি বর্ণমালা ব্যবহূত হচ্ছে।
চাকমারা একসময় তান্ত্রিক বৌদ্ধমতে বিশ্বাসী ছিলেন। এ মতের অনুসারী লুরি বা পুরোহিতেরা চাকমা বর্ণমালার সাহায্যে তাঁদের ধর্মগ্রন্থ আঘরতারা রচনা করেছিলেন। এ আঘরতারা গ্রন্থটি চাকমাদের সবচেয়ে প্রাচীন পুঁথি হিসেবে আজও বিবেচিত হয়ে থাকে। তা ছাড়া তাহ্লিক শাস্ত্র বা চিকিৎসাশাস্ত্রে চাকমা বৈদ্যরা (পল্লি চিকিৎসক) চাকমা লিপি ব্যবহার করতেন, যেটি বংশপরম্পরায় ও তাঁদের শিষ্যদের মাধ্যমে এর ব্যবহার আজও অব্যাহত রয়েছে।
আঠারো শতকের (১৭৭৭) দিকে চাকমা সাধক কবি শিবচরণ তাঁর গোজেন লামা গীতিকাব্যটি চাকমা বর্ণমালায় রচনা করেছিলেন। তাই ধারণা করা হয়, চাকমা সাহিত্য ও তাহ্লিক শাস্ত্রচর্চায় চাকমা বর্ণমালা ব্যবহারের প্রচলন বহু আগে থেকে শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, ১৮৬০ সালে খ্রিষ্টান মিশনারিজদের উদ্যোগে এলাহাবাদ থেকে চাকমা বর্ণমালায় বাইবেলের অনুবাদ করা হয়। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ধর্ম প্রচার হলেও এটি চাকমা বর্ণমালার অন্যতম স্বীকৃতি ছিল, যেটি চাকমা বর্ণমালার ভিত্তিকে আরও মজবুত করেছে। এ ছাড়া ১৯৪০ সালের শুরুর দিকে রাঙামাটি হাইস্কুলের ইংরেজ শিক্ষক মি. মিলার চাকমা সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের বাংলা হরফে চাকমা ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষাদানের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর এ উদ্যোগকে ধর্মান্তঃকরণের প্রচেষ্টা মনে করে সে সময়ের চাকমা সমাজ প্রবলভাবে এর বিরোধিতা করেছিল। বিরোধিতা সত্ত্বেও পরবর্তীকালে মি. মিলার ‘চাকমা প্রাইমার’ নামে একটি শিশুপাঠ্য বই প্রকাশ করেছিলেন। তবে স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে সুগত চাকমা প্রথমবারের মতো চাকমা বাঙলা কধাতারা নামে একটি চাকমা-বাংলা অভিধান রচনা করেছেন। এটিই চাকমা ভাষার প্রথম অভিধান হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
১৯৭৮ সালে সরকারি উদ্যোগে পার্বত্য জেলায় উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেখানকার জাতিসত্তাগুলোর ভাষা, সাহিত্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা চর্চা শুরু হয়। এ ছাড়া ১৯৮১ সালের গঠনলগ্ন থেকে সাহিত্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘জুম ইসথেটিকস কাউন্সিল’ সংক্ষেপে ‘জাক’ পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীগুলোর সাহিত্য-সংস্কৃতি নিয়ে আজ পর্যন্ত নিরলসভাবে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০১ সালে জাক-এর সহায়তায় মোস্তাফা জব্বার চাকমা বর্ণমালার প্রথম সফটওয়্যার তৈরি করেন। উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশকের প্রথম দিকে পার্বত্য চট্টগ্রামে পদায়নকৃত সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের কাজের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থায় তাঁদের চাকমা-মারমা-ত্রিপুরা ভাষা শেখানো হতো।
১৯৯৭ সালে চুক্তি স্বাক্ষরের আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর মাতৃভাষার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিল না। কিন্তু পার্বত্য চুক্তির খ খণ্ডের ৩৩ নম্বর ক্রমিকের খ(২) নম্বর উপ-অনুচ্ছেদে প্রাথমিক পর্যায়ে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের কথা উল্লেখ থাকায় বাংলা ভিন্ন অন্যান্য ভাষাভাষীর মাতৃভাষা প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। এ স্বীকৃতির অংশ হিসেবে রাঙামাটি জেলা পরিষদ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশ কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চাকমা ভাষা ও বর্ণমালা চর্চার প্রশিক্ষণ দেয়। এ ছাড়া বর্তমানে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা মাতৃভাষায় প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষাদানের কর্মসূচি তাদের কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
আমরা জানি, ভাষার লিখিত চর্চা না থাকলে ভাষার বিকাশ ও শ্রীবৃদ্ধি ঘটে না। এ দেশের ক্ষুদ্র জাতিগুলোর সাহিত্য চর্চা বাংলা হরফে হলেও অনেক ক্ষেত্রে উচ্চারণগত সমস্যার সমাধান বাংলা দ্বারা সম্ভব নয়। তাই বাংলা হরফে চাকমা সাহিত্য চর্চা করতে গেলে ভাষার মূল উচ্চারণ পরিবর্তিত হয়ে এর অর্থ ভিন্ন হওয়ার যথেষ্ট ঝুঁকি থাকে। কিন্তু এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সম্ভাবনার বিষয় হলো, পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শিশুরা মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভের অধিকার লাভ করেছে। এর ফলে ২০১০ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষানীতিতেও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা ধরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১৪ সাল থেকে পাঁচটি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষার মাধ্যমে প্রাক্-প্রাথমিক শিক্ষাদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের দ্বারা এ দেশের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলোর নৃ-ভাষাবৈজ্ঞানিক সমীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ উদ্যোগ যথাযথভাবে পরিচালিত হলে এ দেশের বিলুপ্তপ্রায় অনেক ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও বর্ণমালা সংরক্ষণ ও পুুনরুজ্জীবন করা সম্ভব হবে বলে অনেকে আশা প্রকাশ করছেন। কেননা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মূল লক্ষ্যই হলো বিশ্বের সব ভাষার নমুনা সংরক্ষণ ও মৃতপ্রায় ভাষাকে পুনরুজ্জীবিত করা।
পুলক বরণ চাকমা: সহকারী পরিচালক, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট।

চাকমা ভাষায় নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র 'মর থেংগারি'

বাংলাদেশে ১৩ তম আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য ও মুক্ত চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে চাকমা ভাষার চলচ্চিত্র 'মর থেংগারি'।
বলা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশে নির্মিত চাকমা ভাষার প্রথম চলচ্চিত্র।
বাংলাদেশে বাংলা ছাড়াও প্রায় ৪৫টি ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। তবে দেশের ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা চলচ্চিত্রে খুব কমই উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে নির্মিত চাকমা ভাষার প্রথম চলচ্চিত্রের পরিচালক অং রাখাইন বিবিসিকে বলেন, "আমাদের দেশের জাতিসত্ত্বাগুলোর ভাষাকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না। এবিষয়টি থেকেই আমার আগ্রহটা আসা।"
চাকমা ভাষায় 'মর থেংগারি' শব্দের অর্থ আমার বাইসাইকেল।
চলচ্চিত্রটির পরিচালক জানান, এক চাকমা পুরুষকে ঘিরে এই চলচ্চিত্রটির কাহিনী। যার শেষ সম্বল একটি বাইসাইকেল।
৬৪ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের বাইরেও প্রদর্শণী করা হবে বলে জানান মি. রাখাইন।
মি. রাখাইন বলেন, ভবিষ্যতে তার রাখাইন সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি চলচ্চিত্র নির্মানের ইচ্ছা আছে।

চাকমা জাতির ইতিহাস

সংক্ষিপ্ত; বাংলাদেশে একটি অন্যতম বড় উপজাতি গোষ্টী হইল চাকমা । তাহারা সংখ্যায়  পার্বত্য  চট্রগ্রামের উপজাতিয় জনগনের  অধ্যেকের বেশি । চাকমা জাতির উৎপত্তি  সম্পর্কে তাহারদের অভিমত হইল যে , তাহারা এক সময চম্পক নগরের বাসিন্দা ছিল । কেউ বলিয়াছেন , চম্পক নগর উত্তর পশ্চিম ভারতে কেউ বলিয়াছেন উত্তর-পূর্ব ভারতে ;আবার কেউ বলিয়াছেন হিমালয়ের পাদদেশে ;কেউ বলিয়াছেন চম্পক নগর মালয়শিয়াতে ; চাকমা কাহিনী তে ব্যাক্ত হইয়াছে যে চম্পক নগর হইতে এক চাকমা রাজপুত্র রাজ্য জয়ের উদ্দেশ্যে বার্মার আরাকানে মন করে এবং নবম শতক থেকে চতুর্দশক পর‌্যন্ত সেখানকার কিছু অন্চলে তাহারা শাসন করায় চালান । অতপর স্হণীয় আরাকান বাসিদের কতৃক বিতাহৃত হইয়া চট্রাগ্রামে ও  পার্বত্য  চট্রগ্রামে চাকমা রা স্হায়ীভাবে  বসবাস  আরম্ব করে । মগদের মতে চাকমারা মুঘুল দের বংসদর , এককালে মুঘল গন তাহাদের হাতে পরাজিত হইলে আরাকান রাজা তাহাদের বন্দি করে আরাকানি নারী দের সাথে বিবাহ দেন । এইসব মুঘল সৈন্যদের ঔরসে আরাকানী নারীদের গর্বে ধারন করিয়া যে জাতির উৎপত্তী হইয়াছিল ,তাহারেই পরবর্তিতে সেক বা সাক নামে পরিছিত হইয়াছেন । 

রাধামোহন ধনপতি উপাখ্যান  এবং চাটগা ছাড়া এই পুরা কাহিনী দুটিতে চাকমা জাতির আদি উৎস্য সম্পকে জানা যায় চাকমারা এক সময় চম্পক নগরে বাস করিত । এই চম্পক বা চম্পা থেকেই চাকমা জাতির নামকরন করা হইয়াছে বলিয়া অনেকে মনে করেন ।ত্রিপুরার ইতিবৃত্ত ’রাজনামায়  উক্ত কাহিনীদ্বয় সমনো্ধ অনেকের মতভেদ রইয়ছে । আবার চাকমা সমাজে প্রচলিত এক গানে চম্পা নগরে নয় নুর নগরের উল্লেখ রইয়াছে । এই নয় নুর ত্রিপুরায় ।অবস্হিত ,ত্রিপুরা জেলায়,, জেলায় গোমতি নদির উৎস্য সম্বন্ধে যে আখান প্রচলিত রইয়ছে তাহা চাকমা সমাজ এখনও পবিত্রঞ্জান বলিয়া মনে করে । পার্বত্য ত্রিপুরার সাথে চাকমাদের যোগসুত্র রইয়াছে প্রাচিনকাল থেকেই । এই নুর নগর্ চম্পক নগর কিনা তাহাও  পর‌্যাপ্ত গবেষনার অপেক্ষা রাখে ।

প্রবীন বয়স্ক শিক্ষিত চাকমারা তাহাদের চাকমা নাম টি প্রথম ব্যাবহার করেন । অন্য দিকে চাকমা সমাজের বৃহত্ত প্রবিন জনগোষ্টি চাঙমা নামেই নিজেদের পরিছয় দিয়া থাকেন । বর্তমানে শিক্ষিত যুবক চাকমারা   অনেকেই চাকমা শব্দটির বদৌলে চাঙমা নামটি ব্যবহার করিবার পক্ষেই অধিক আগ্রহী । তবে কেউ কেউ বলেন চাকমাগন চম্পক সর হইতে আগত লোক বলিযা তাহারা চাকমা বা চাঙমা নামটি গ্রহন করিয়াছেন ।বাংলাদেশের বর্তমানে রাঙ্গামাটি , খাগড়াছড়ি , বান্দরবন জুড়িয়া সমগ্র পার্বত্য চট্রগ্রামেয জেলায় চাকমারা বসবাস করিতেছে । ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ও ।অনেক সংখক চাকমা রইয়াছে । রাঙ্গামা িশহর কে কেন্দ্রও করিয়া প্রায় ২,৪২১বর্গ মাইল এলাকা জুড়িয়া চাকমা সারেবকল হিসাবে পরিচিত রইয়াছে । ইহর পরই খাগড়াছড়ির সিমানা । কর্নেল ফাহার  তাহার “ History of Burma` নামক গ্রন্হটিতে উরল্লখ করিয়াছেন যে চাকমারা একালে ব্রক্ষ্ম ।।অধিবাসি ছিল , পরি বক্ষ্ম দেশে হইতে বাংলাদেশে আসে । চাকমারা সবসময় পোহাড়ে ওঠানামা করিয়া থাকে বলিয়া ই তাহাদের স্বাস্হ এত ভাল হইয়া থাকে ।স্যার রিজলি এর মতে ১৮৮১)মতে চাকমাদের দেহে ৮৪.৫% ভাগ মেোলীয় বৈশিষ্ট বিদ্যমান । তাহাদের গায়ের রং সুন্দর এবং ফর্সা , মুখমন্ডল গোলাকার , ওষ্টাধর পাতলা । চোখের মসন ও চুলের রং কালো  চুল গুলি অনেকটা সোজা দেহ প্রায় কেশ হীন থাকে । দাড়ি গোফ কম, পুরুষদের উচ্চতা মাজারি ধরনের ড়ে ৫‘-৬‘ ওখানে মহিলারা গড়ে ৫‘-৪‘ ফুট প্রায় ।চাকমারা সাধারনত মাটি থেকে প্রায় ৬ পুট উচুতে মাচার উপর ঘর তৈরী করে । ঘরটিকে কয়েকটি কামারা ভাগ করে । ঘরে উঠার জন্য তাহারা মংগু ব্যাবহার করে প্রধানত কামরাটি ৪০‘x ২৫” ফুট এবং অন্যৗান্য কামরা গুলো ২৫-১৫ পর্যন্ত উচু হয় । এদের মধ্যে বিল্ডিং ও দালান কোঠা ও রইয়াছে । সাধারনত ছোট ছোট নদীর ধারে এদেনর গ্রাম গুলো গড়ে উঠে । অন্য দিকে ছোট ছোট পাহড়ের উপর তৈরী করা ঘর  দেখিতে অনেক সুন্দর হয়ে থাকে । চাকমাদের সাথে চীনা মঙ্গোলীদের অনেক মিল রইয়াছে । অপেক্ষাকৃত ভাবে  মঙ্গোলীদের নর গোষ্টী দের প্রভাব সমতল বাসির বাঙ্গালিদের তুলনায় তাহাদের উপর অনেক বেশি । দৈহিক গরনে তাহারা অনেক শেক্তি শালি ; উচ্চতায় প্রায় মাজারি আকারের হয়ে থাকে আবার অনেকে লম্বা০হয় । গায়ে লোমের স্বল্পতা, চ্যাপ্টা নাক এবং চোখ ক্ষুদ্র হিসাবে লক্ষ করা যাইতে পারে । চাকমা সমাজ বিভিন্ন গোষ্টিতে বিভক্ত ; প্রায় একশত পঞ্ছাশটি গোষ্টি নিয়া তাদের পুর্ন সমাজ গঠিত । গোষ্টি ভুক্ত প্রত্যেকটি লোক আত্মীয়  সম্পকের বন্ধনে আবদ্ব ।এসব গোষ্টি গুলো আবার বিভিন্ন গোজার অন্তভক্ত হওয়ায় এই ধরনের গোজা বিভক্ত  কেন্দ্র করিয়া চাকমা সমাজ আবদ্বিত । গোষ্টি গুলোর প্রধান কর্তব্য হল , তাহারা এক অপরকে পরস্পরে বিপদ আপতেদ সাহায্য করে । 

 চাকমা সমাজে মধ্যে বিধ্যমান ক্ষুদ্র সংগন হইল পরিবার ; তৎপরি  রইয়াছে গোতি্ত বা গোজা । উহা অপেক্ষ বৃহৎ আয়তনের সামাজিক একক হইল পাড়া বা আদাম । তাহারে চেয়ে অধিব আয়তনের হইল গ্রাম বা মোজার । মৌজার পরবর্তীতে বৃহত্তম চাকমা সমাজ বলি তে চাকমা সার্কেল বা চাকমা জাতির সংঠন কে বুজায় । চাকমারা গৃহ কে ঘর এবং গ্রাম কে আদম বলে আখ্যায়িত করে থাকে ।

চাকমাদের ভাষা সম্পুর্ন স্বতন্ত্র প্রকৃতির । বর্তমানে তাহারা একপট বাংলা উপভাষায় কথা বলে যিাহাকে বলা হয় চাকমা ভাষা । ভাষা তাত্বিক বিশ্রেষনে দেখা যায় , তাহারা পুর্বে টিবটো বার্মান ভাষার পরিভুকাত আরকানি ভাষায় কথা বলিত । চাবমাদের নিজস্ব যে বর্ন লিপি আছে উহাতে আরাকানী ভাষার প্রাধান্য বেশি । চাকমা বর্ন মালায় ব্রম্মলিপিরে অনুরুপ ; তদপুরি আঞ্চলিক ভাষার প্রভাবও  তাহাদের ভাষার মধ্যে  লক্ষ করা যায়।চাকমাদের কথা বার্তায় অনেক ফারসি হিন্দি আরবী ভাষার মিশ্রিন পাওয়া যায় । - See more at: http://www.pcnews24.com/details.php?id=16749#sthash.snbazPlS.dpuf

চাকমা উপজাতিদের জীবন ধারা

বাংলাদেশে ৪৫ টির বেশি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। শত শত বছর থেকে এদেশে এসব জনগোষ্ঠী বাঙালিদের পাশাপাশি বসবাস কওে আসছে । তাদের প্রত্যেকের রয়েছে আলাদা আলদা সংস্কৃতিক ও ঐতিহ্য। এসব জনগোষ্ঠী উপজাতি নামে পরিচিত । পাহাড় সমতল ও বনভুমিতে তারা বাস করে। বাংলাদেশের প্রধান কয়েকটি উপজাতি জনগোষ্ঠীর বিস্তারিত দেওয়া হল-
১।চাকমা
২। মারমা
৩।সাঁওতাল
৪। গারো
৫।মণিপুরি
৬।মুরং
৭।খাসি
৮।হাজং
৯।ওঁরাও
১০।রাজবংশী
আমরা এখনে চাকমা উপজাতি জনগোষ্ঠীর জীবনধারা সর্ম্পকে জানব-
বাঙালির পরে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী হচ্ছে চাকমা । চাকমারা নিজেদের ‘চাঙমা‘ বলেন।  রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি জেলায় চাকমারা বসবাস করেন্‌ বান্দরবান জেলায়ও এরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করেন। 
চাকমাদের সামাজিক বৈশিষ্ট্য চাকমারা বৈৗদ্ধ ধর্মালম্বী। এরা অনেক গোষ্ঠীতে বিভক্ত। এদের পরিবারে পিতৃপ্রধান। চাকমা জনগোষ্টীর প্রধান হচ্ছেন রাজা। যে কোনো ব্যাপারে তার মতামত চুড়ান্ত বলে মানা হয়। চাকমাদের কিছু ভালো গুনরয়েছে । তারা বিপদে এবং অভাবের সময় একে অপরকে সাহায্য করে।চাকমা সমাজে নানা বৈশিষ্ট্য পরিপূর্ণ। এখন আমরা সেগুলো সর্ম্পকে জানব।
গৃহ ও বাসস্থান 
চাকমারা গ্রামকে ‘আদাম‘ এবং গ্রামের প্রধানকে ‘কারবারি‘ বলে । ছোট ছোট নদীর তীরে কম উচু পাহাড়ের ওপর খোলামেলা জায়গায় গ্রামগুলো অবস্থিত । শক্ত গাছের ওপর কাঠ ও বাঁশ দিযে এরা মাচাঘর বানায় । মাচাঘরে ওঠার জন্য কাঠের সিঁড়ি থাকে । মাচাঘরের সামনে জলের পাত্র রাখার জন্য একটি খোলা ছোট মাচা থাকে। একে ‘ইজর‘ বলে । প্রায় সব গ্রামে মন্দির আছে। মন্দিরকে এরা ‘ক্যাং‘ বলে। এখন চাকমারা সমতল ভুমিতে ও বসবাস করে। তারা লেখাপড়া ব্যবসা- বাণিজ্য , চাকরি ইত্যাদি নানা পেশায় বেশ সুনাম অর্জন করেছে। 
খাদ্যভ্যাস
চাকমাদের প্রধান খাদ্য ভাত । তারা ভাতের সাথে মাছ মাংস ও শাকসবজি খেতে ভালোবাসে । শুটকি মাছ খেতে এরা খুব পছন্দ করে।
পোশাক
এরা নিজেদের তাঁতে কাপড় বোনে । এই কাপড় দিয়ে তারা পোশাক তৈরি করে। এই পোশাকে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যর ছাপ আছে। চাকমা নারীদেও ঐতিহ্যবাহি পোশ কের নাম পিনোন-খাদি। কিশোররা নানা রকম পোশাক পরে। এখন আধুনিক পোশাকেরও চাকমারা অভ্যাস্ত হয়ে উঠেছে। 
পেশা 
চাকমারা জুম পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে। পাহাড়ের ঢালু জায়গায় গাছপালা গর্ত কওে বীজ বপণ করে। একে ‘জুম‘ চাষ বলে। সমতল ভ'মিতে লাঙল দিয়ে চাষ করে। বিভিন্ন ফসল ফলায় । চাকমারা পোশাক তৈরি করে। দেশি ও বিদেশিদের কাছে তাদের উলের তৈরি ‘শাল‘ ও অন্যান্য কাপড়ের চাহিদা রয়েছে। এরা বাঁশ ও বেত দিয়ে ঝুড়ি , পাখা, চিরুণি, বাঁশি ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত তৈরি করে। এদের তৈরি দেখতে খুবই সুন্দর। 
সামাজিক ও ধমীয় উৎসব 
চাকমাদের মধ্যে অনেক পূজার্পাবন প্রচলিত আছে। এরা গৌতম বুদ্ধেও জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মৃত্যু দিনের স্বরণে ‘বৈশাখী পূর্ণিমা‘ পালন করে। এছাড়া এরা ‘মাঘীপূণির্মা‘ পালন করার সময় ‘কঠিন চীবরদানোৎসব‘ পালন করে। এদের শ্রেষ্ঠ উৎসব ‘বিজু‘। বাংলা বছরের শেষ দুই দিন ও নববর্ষের প্রথম দিন এরা উৎসব পালন করে। বিয়ে ও অন্যান্য উৎসবে এরা নাচগান করে। নানা রকম বাদ্য যন্ত বাজায়। 
আচার অনুষ্টান চাকমাদের অনেক আচার অনুষ্টান রয়েছে। জন্মের পর শিশুর মুখে মধু দেয়া হয়। সাত দিন পর ওঝা ডেকে শিশুর চুল ধুয়ে তাকে পবিত্র করা হয়। কেউ মারা গেলে মৃত্যুদেহকে সাদা কাপড়ে ঢেকে রাখা হয়। মৃতদেহ স্নান করানো হয় এরা মৃতদেহকে আগুনে পোড়ায় । শিশুদের মৃত্যু দেহ কবর দেয়া হয়। চাকমাদের বিবাহ রীতি চমৎকার । বরযাত্রিরা কনের বাড়ি পৌঁছালে তাদের সাদরে গ্রহণ করা হয়। মেয়েকে বরের বাড়িতে এনে ‘চুঙুলাং‘ পুজা শেষে বিয়ের অনুষ্টান শেষ করা হয়। চাকমাদের নিজস্ব বর্ণ মালা আছে। নিজেদের মধ্যে তারা এই ভাষায় কথা বলে । তাদের নিজস্ব নাচ গান ও সাহিত্য আছে। রূপকথা , পুরাকাহিনী ও ছাড়া প্রচলিত আছে। নাদের খারা , কুস্তি এবং ঘিলা ( এক রকম বিচি দিয়ে গুটি খেলা ) এদের প্রিয় খেলা । মেয়েরা বউচি খেলতে ভালোবাসে । চাকমারা সুসাস্থের অধিকারি । চাকমামেয়েদের মধ্যে লেখাপড়া শিখে শিক্ষিত হবার প্রবণতা বেড়েছে। এদের অনেকেই এখন উচ্চশিক্ষিত ও সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হচ্ছেন । তারা বাংলা ভাষায় লেখাপড়া করছে । নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতিও তারা বেশ যন্তবান । 

Saturday, July 4, 2015

পার্বত্যঞ্চলে আদিবাসীদের প্রিয় খাবার ।দেখুন কেউ চিনতে পারেন কিনা ?


the future of the chakma students of Mizoram

This is the matter of the future of the chakma students of Mizoram.The chakma student will not be considered under category I of Mizoram state Technical entrance Examination.

হাম্বোবি আঅ হাম্বোধন ।


story

আমা জুম্ম সমাজত পুরোনি রিদি সুদোম প্রায় উদি যাললোই ।মিলে মরদর ড্রেস মডার্ন যুগত বদলি যাল্লই ।এলা পেলা বেবেরাইদি আমা জুম্ম নিজেনি সংস্কৃতি ।তবে কয়েক জনে এব সং আমা পেলেই এচ্ছে রিদি সুদোম দোরি রাগেয়োন ।

if someone wants to leave you.. just let him go.

Don't mine plz...
if someone wants to leave you..
just let him go.,may be she will retu
rn..may be she wants return...but you surely will learn a lesson..

ভেজা সকাল

বৃষ্টি ভেজা সকালের নতুন দিগন্তের নৈসর্গিক স্বপ্নপুরি পাহাড়ে আদিকাল থেকে বসবাস করে আসা পাহাড়ী জুম্মবির পক্ষ থেকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও সংস্কৃতির সুগভীর বার্তা ।উদিত হোক প্রতিটি হৃদয়ে জাতীয়তার আত্মা ।

রাধামন-ধনপুদি কাহিনীর ইতিহাস

চাকমা জাতির আদিনিবাস ছিল চম্পকনগর। সেই চম্পকনগর রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটি জনবসতি গ্রামের নাম ছিল ধনপাতা। গ্রামটি ছিল ধনে জনে পরিপূর্ণ এবং ঐ গ্রামের ছয়কুড়ি মানে একশ বিশটি চাকমা পরিবার বাস করতো। তখন চাকমারা মাচাং ঘরের উপর বাস করতো। ধনপাতা গ্রামের সব বাড়িই ছিল মাচাংঘর। চম্পকনগরেরর সেই ধনপাতা গ্রামের মেনকা ও কুপুদি নামে দুইবোন বাস করতো। একসময় তাদের বিয়ে হয় ঐ গ্রামের অবস্থাসম্পন্ন ঘরে। মেনকার স্বামীরর নাম জয়মঙ্গল শুধুঅবস্থাসম্পন্ন নয় সেই ধনপাতা গ্রামের বিশার প্রভাব প্রতিপত্তিও ছিল। একসময় তাদের দুবোনের মধ্যে মেনকার ঘরে জন্ম হয় রাধামন ার কুপুদির ঘরে জন্ম হয় ধনপুদি। রাধামন ধনপুদি থেকে একবছরের বড়। তারা দুজন বেড়ে ওঠে মা-বাবা, নানা-নানি, দাদা-দাদির কোল বেয়ে। শিশুকালে তাদের নানা নানিরা দোলনায় বেয়ে নানা-রকম ঘুম পাড়ানি গান গেয়ে ঘুম পাড়াতো। যেমনঃ
নাদিন দ্বিবে এধঝেবর,
দাঙর দাদা একবজর।
গলা মরিজে বান্যেগোই,
পারবো দগা আন্যেগোই।
নাক্স গাজর রিবেং জু,
বুন্যাদুলোন কেরেং জু।
কেরেং জু ধুলোন কেরেদ চাদ,
এবেত বুনিলো চলাবাপ।
ধুলোন বুনানা থুম অল,
নাদিন দুওবো তুলিল।
বোত্যা দোরি ঘনপাক,
অলি দাগিদের চলাবাপ।
সোনার দোলোনত রুবোর দোরি,
দাদালোই বেবে ঘুম যাদন সমারে দোলনত পরি।
অলিরে অলি অলি অলি,
আদর লোইয়্যা গলি।
আমা দাদা মারি আনিব ঝার পেইক।
ধুল্ল বুয়ারে ধুলনান,
আহজি উধিল জনমান।
মেইয়্যা দিদিল মেইয়্যা জালে,
মাত্তল অল মহাকাল।
দিনর গাঙে দিন উজাদন,
গুরো দুওবো বারদন।
এ্যাহেধ ফরেল হাদাবন,
চিগোন ছড়ার পাদাবন।
মেনকা পুও রাধামন।
রঙকুদি বিদ্যা দোল গমপুদি,
কুপুদি ঝিব ধনপুদি।
চগদায় কামাল্যে থুরকুন,
মেনকা বোন, পুগো বেল ফুজিমে গেল
ফুদিলেম খনাত ঝেদেনা খৈ,
গাবুর, সুন্দর অলোখকোই।
গুল সদরত পল্লাকখোই,
সাগর দিন গেলগোই।
বেবেই ধনপুদি বার বজরত পল্লগোই।
ঘিলে হারাত তাক চেলাক,
সয় সমাজ্জে লাক পেলাক।


এভাবে দোলনায় দুলতে দুলতে কবে যে তারা কৈশর পেরিয়ে যৌবনকালে পদার্পণ করলো তাদের কারোর হুঁশ নেই। একদিন মাটিতে নেমে খেলতে শুরু করে সঙ্গী- সাথীদের নিয়ে ঘিলে খেলা, নাদেং খেলা,পোর খেলা, পোত্তি খেলা, গুদু খেলা করে। যেমনঃ
ফুলে ল্যাম্যা ফুল বিঝু,
তারপর দিন মূল বিঝু।
সমারে বেরাদন গুরো ঝাক,
ঘিরে ভাগ গোন্যে চলাবাপ।
ধল্য ঘিলে এক থাগত,
মিলে মদ্দে এক ফাগত।
লামি এলাক গরত্তুন,
অলাক এক ফাগত মরত্তুন।
পেংগুল রাঙা ঘিলেগুন,
কমর দর মিলেগুন।
লামি ঘোস্য ফুরেলাক,
আদাম্যা পাড়াল্যা থুবেলাক।
বোত্যা দোরি ঘনপাক,
খবর দিল চলাবাপ।
কখনো মুখে খেংগরং, বাঁশি, ধুধুক, শিঙ্গ বাজাতে শিখলো। এভাবে তারা একদিন হেসে খেলে তাদের পৃথিবী বড় হয়ে উঠলো এবং বয়স বাড়ার সাথে সাথে সঙ্গী সাথীদের অনেকে বড় হয়ে গেল।মূলত রাধামন ধনপুদি কাহিনী চাকমাদের একটি ঐতিহ্যবাহী কাহিনী। চম্পকনগরের সুন্দরী কন্যা কুপুদির কন্যা ধনপুদি এবং মেনকা পুত্র রাধামনের প্রেম মিলন বিরহ নিয়ে রাধামন - ধনপুদির অমর প্রেম কাহিনী রচিত হয়েছে। এ কাহিনীর মধ্যে দেখা যায়, চাকমাদের প্রাচীন সামাজিক প্রথা এবং সামাজিক ঐতিহ্য। যেমন তাদের দুজনের দীর্ঘদিনের প্রেম থাকা সত্তেও ধনপুদির মা বাবা তাদের একমাত্র ভালোবাসাকে উপেক্ষা করে প্রতিবেশী গ্রামের এক ধনী দেখে আদিচরণের সাথে বিয়ের বন্দোবস্ত করে। এতে ধনপুদির মতকে প্রাধান্য না দেওয়ার কারণে জোরপূর্বক আদিচরণের সাথে বিের পিড়িতে বসতে হয় ধনপুদির । ধনপুদিকে দেখতে এলে....
হল্যা মেলি পান খাদন,
ধনপুদিরে বৌ চাদন।
বগরা মুঝি কপুদি,
কয়দ্যা ঝিবরে বৌ-দি।
বিদুর শুনি রাগ বাড়ে,
উরুজ আহ্রাজ হাম গরে।
তাগল লাগেই সামেই ব,
দেঘা আনিলাক জামেইব।
আদাম্যা গুরো খাপ্পেই চান,
আদিচরণরে রিনি ছান।
সাঝিত তলে ঝামপাদি,
নোনেয়্যা ভোন্ন ধনপুদি।
পিঝুম বাচ্ছো ধোয্যাগোই,
সামু পাগেই পোয্যাগোই।
সিত্তুন ঘরত উথ্যাগি,
সাঝিত তলে বোচ্ছেগি।
মরিছ বাদে ধনপুদি,
কামদ বাচ্ছে কপুদি।
পানে খেইয়্যা সিবুদি,
গত্তন আদিচরণরে বিগিদি।
মেলাঘরো জামেইব,
বেবে ধনপুদিলোই হুব মানেব।
আধহ ভরেইনে দৈ খেইয়্যা,
নিজ দি আদিচরণরে চেই যেইয়্যা।
ফুলর কাবর বিঝেদি,
বোচ্ছে ধনপুদিমা পিজেদি।
পিজি গেল আজুরে দেগেই দিল,
আদিচরণ এ্যাই য়ে ত বৌ- ব।
মুজুঙে কপুদি মুজিরে
গানে ধূলে নাঝদন,
জাগায় জাগায় আহজদন।
মুঝি কপুদি হাঝিল,
দাদা আদিচরণে লাজেল।
সালাঙ গোরি পোয্যাগোই পান,
লঘে সিবুদি উল্লেই পল্ল পিজেদি,
ফেল্যা আহথান বিজেদি।
দৈয়্যা মাধাত ঘি অব,
হল কপুদি হি অভ।
বুগদ ফুদিল শক্তি শেল,
ঘরত্তুন চিত্তি নামি গেল্।
আজু ঘরত বোচ্ছেগোই,
গুজুরি গুজুরি হানেল্যেই।
বোত্যা দোরি ঘনপাক,
হল আজু চলাবাপ।
ভাদে হাবরে হেই পেবে,
দিলে মা বাবে যেই পেবে।
নিরুপায় ধনপুদি মা-বাবার এই সিদ্বান্ত কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা। কারণ তার সাথে রাধামনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক চলতেছে। অনেক দিনের মন দেওয়া নেওয়ার স্মৃতির ঘটনা কিছুতেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছেনা রাধামন আর ধনপুদি। তারপরেও আদিচরণের সাথে বিয়ের পিড়ি বা চুমংলঙ অনষ্ঠানে বসতে হয় ধনপুদির। এরপর...
চেরোহিত্যে বাদ্য বাজাদন,
ডুলে ডগরে নাঝদন।
কামদ বাচ্ছে যেদেই কপুদি,
চুমুলঙ পানি হুম্মো গাঙত ভরা গেল
নোনিয়্যে ভোন্নো ধনপুদি।
গাঙত এক সালাং দি বোচ্ছেগোই,
গুজুরি গুজুরি নোনিয়্যে ভোন্ন হানেল্যেই।
পানি হুম্মো ভোজ্জেগোই,
চালাগি বুদ্ধি তুল্যেগোই।
চুমুলঙ পানি হুম্মোলোই,
রাধামনদাগি ঘরত উথ্যেগোই।
চাকমাদের রীতিতে এই চুমুলঙ পানি নিয়ে যেই ঘরে উঠে সেই ঘরে বৌ হতে হয়। তাই ধনপুদি রাধামন ঘরে চুমুলঙ পানি নিয়ে উঠার কারণে ধনপুদির মা-বাবা ধনপুদিকে চাকমা রীতি অনুযায়ী রাধামন ঘরে বিয়ে দিতে বাধ্য হই। এজন্য চাকমারা কনে যখন পানি আনতে যায় তখন কনের সাথে ৪/৫ জন সঙ্গী যেতে দেওয়া হয় যাতে কনে ভুলে চুমুলঙ পানি নিয়ে অন্যের ঘরে না উঠে।. ..থুম অল...

চাকমাদের বিবাহ

চাকমাদের বিয়ে এখনো নির্দিষ্ট প্রথার মধ্যে আবর্তিত। এ প্রথার পদে পদে রয়েছে বৈচিত্র্যতা এবং চাকমাদের নিজস্বতা, তা অন্যদের জন্য উপভোগের এবং কৌতূহল নিবারণের খোরাক। বিবাহযোগ্য চাকমা ছেলে-মেয়ের জন্য অভিভাবক নিজে এবং নিকটাত্মীয় মারফত পছন্দনীয় পাত্রীর বাড়িতে প্রথমে প্রস্তাব পাঠাতে হয়। চাকমা ভাষায় এ প্রস্তাব পাঠানোকে বলা হয় "উদা লনা"। পান-সুপারি,নারিকেল,রকমারি পিঠা, ড্রিংকস নিয়ে কনের বাড়ি গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব দিতে হয় বরপক্ষকে। পাত্রীপক্ষের জবাব ইতিবাচক হলে শুরু হয় পরবর্তী পর্ব। বিয়ের ব্যাপারে উভয়পক্ষ মত দেওয়ারর পর বিবাহের চূড়ান্ত আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। তখন কোনোপক্ষই প্রস্তাব প্রত্যাখান করতে পারেনা। কোনো পক্ষ বিয়েতে অসম্মত হলে সমাজে অপর পক্ষের মানহানি ঘটে। যে পক্ষের মানহানি ঘটবে সে পক্ষকে অপর পক্ষ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। চাকমা ভাষায় এ ক্ষতিপূরণকে বলে "লাজভার"। এ ছাড়া দু'পক্ষের বিয়ে করতে সেই পাত্রীকে আর কেউ প্রস্তাব দিতে পারবেনা। কেউ তা জেনেও বিয়েরর প্রস্তাব পাঠালে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। চাকমা কনে দেখাকে বলে 'বউ চা যানা'। কনে পক্ষের ইতিবাচক সারা পাওয়ার পর দু'পক্ষ নির্ধারিত একটি দিনে আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে খানাপিনায় বসে। বিয়ের শুভ দিনক্ষণে রয়েছে পাত্রীপক্ষের "দাভা" নির্ধারণ। দাভা অর্থ পণ। দাভা হিসেবে সাধারণত টাকা, চাল, দ্রব্যসামগ্রী, হাঁস-মুরগী,ছাগল, মাছ,মাংস ইত্যাদি দাবি করা হয়। চাকমা সমাজের বরপক্ষ কনেপক্ষকে পণ দেয়। এটি বরপক্ষের অতিরিক্ত খরচ। চাকমা ভাষায় একে বলে 'উবোর খজ্জি'। এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য দ্বিতীয়বার কনেপক্ষের বাড়ি যাওয়াকে বলে 'দ্বিপুর'। এর অর্থ দ্বিতীয়বার সফর। দ্বিপুর পাত্রীপক্ষের বিয়ের দিন-তারিখ নির্ধারণ সম্ভব না হলে তৃতীয়বার যাওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয়। তৃতীয়বার পাত্রীপক্ষের বাড়ি যাওয়াকে বলে'মদ পিলাং'। পাত্রীপক্ষকে পাত্রপক্ষের দেওয়া মালামাল ও অলঙ্কারদ্রব্যকে বলা হয় "বোয়ালি"। উভয় পক্ষের মতামত সাপেক্ষে বিয়েরর তারিখ ঠিক করাকে বলে'থক দরা যানা'। তবে আধুনিক চাকমা সমাজে এটি অনেকটা বিয়েরর একটি আনুষ্ঠানিক পর্বে পরিবর্তন হয়েছে। বিবাহ অনুষ্ঠানে রয়েছে কয়েকটি পর্ব। বউ আনতে যাওয়া বরযাত্রীকে "বউ হজা যেয়ে(বউ আনার দল) আর বউকে বাড়ি পৌঁছানোর দলকে বলা হয় "বউ বারে দিয়ে"। বরপক্ষ থেকে "বউ হজা যেয়ে "দল বেজোড় সংখ্যক বউ আনার জন্য যায়। "বউ হজা যেয়ে ও বউ বারে দিয়ে দলের সদস্যদের মধ্যে সংখ্যায় বেশি থাকে যুবক-যুবতী। বরপক্ষের কয়েকজন অতি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য সদস্য থাকেন যেমনঃ-সাবালা,বউ আদানি(কনের পথ প্রদর্শক) ও ফুল বারেং বুগনি(কনের সাজানো পোশাক ও অলঙ্কারদ্রব্য বহনকারী)। বউ আদানি হলেন ঠাট্টা সম্পর্কীয় নানি বা বর দাদি এ ধরনের একজন প্রৌঢ়া। সাবালা হলেন বরের ঠাট্টা সম্পর্কীয় ঘনিষ্ঠ আত্মীয়, আপন অথবা কাকাতো, জেঠাতো, ভগ্নীপতি বউ তুলানার দায়িত্ব পালন করেন। বউ তোলার অনুমতি পাওয়ার পর ছোটভাই বা ছোটবোন বা বরের নিকট আত্মীয় একজন ছেলে বা মেয়ে বাড়ির মূল প্রবেশপথে পিঁড়ি পেতে কনের পা ধুইয়ে দেয়। এরপর বরের মা (যদি সধবা হন) অথবা অন্য একজন সধবা প্রবেশপথের দু পাশে রাখা দুটি কলসির গলায় বাঁধা সাত প্রস্থ সুতা কেটে কনের বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলে বেঁধে দেন। এরপর বউকে নিয়ে যাওয়া হয় ফুলঘরে। বধুবরণ অনুষ্ঠানে বাড়ির সদর দরজায় যে দু'টা পানিভর্তি কলস রাখা হয় সেগুলোর নাম"মঙ্গল কলসি"। সেই মঙ্গল কলসির ঢাকনার উপর মোমবাতি বা সলাতে জ্বালানো হয়। কলসির গলায় বাঁধা সুতা কেটে দেওয়ার পর অন্যান্য আনুষ্ঠানিক অনুসরণ করে কনেকে বিয়েতে তোলা হয়। মঙ্গল কলসির ঢাকনার ওপর রাখা হয় আগুন যাতে বিপত্তি না ঘটায় সেভাবে সতর্ক থেকে কনেকে সাতনাল সুতার ওপর দিয়ে হেটে বাড়িতে প্রবেশের এ রীতি আছে। চাকমাদের বিবাহের মূল অনুষ্ঠান হলো "চুমুলাঙ পূজা"। চুমুলাঙ পূজা অনুষ্ঠানে একজন ওঝা বা পুরোহিত থাকেন। তাকে হতে হয় বর-কনের উপরিস্থ "খেইল্যা কুদুম"বা বাইরের আত্মীয় (গুরুজন সম্পর্কীয়)। চুমুলাঙে একটি বেদিতে দুটো পূজার ঘট বসানো হয়। সেখানে বরের জন্য চাল ও কনের জন্য ধান দেওয়া হয়। 'সামমুয়া হলো বাঁশ বেতের তৈরী ঢাকনাযুক্ত পাত্র। চুমুলাঙে একটি মালা সুওর,তিনটি মুরগি ও মদ উৎসর্গ করা হয়। চাকমা ভাষায় চুমুলাঙেরর দেবী হলেন পরমেশ্বরী। চাকমাদের বিয়ের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের নাম "জদন বানাহ্"। জদন বানাহ্ অর্থ বর-কনের জোড়া বন্ধন। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বর-কনে সমাজের স্বীকৃতি লাভ করে। বরের বড় ভগ্নীপতি সম্পর্কীয় একজন 'সাবালা' এসে নবদম্পতির জন্য সাজানো একটি কক্ষে বরের বামে বসান কনেকে। তিনি উচ্চেস্বরে বিয়েতে উপস্থিত জনমন্ডলীর মতামত কামনা করে বলে ওঠেন 'অমুক আর তমুকের জদন বানাহু দিবার উঘুম আগেনে নেই' বলে। সবাই উচ্চেস্বরে আছে-আছে বলে স্বীকৃতি জানায়। তারপর সাবালা সাত হাত লম্বা এক টুকরা কাপড় দিয়ে বর-কনের উপরের কোমরে জড়িয়ে বেঁধে দেন। আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্নের পর বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। উপবিষ্ঠ বর আর কনে তখন যার যার আসন থেকে উঠে দাঁড়ায়। সমাজের বিশ্বাস, আসন থেকে যে আগে উঠতে পারে সেই সারাজীবন অপরজনের উপর কতৃত্ব ফলাতে পারে। চাকমা বিয়ের আরেকটি পর্ব "খানা সিরেদেনা"। এর অর্থ হলো সমাজের দায় শোধকরা। বিয়েতে সমাজের স্বীকৃতি আদায়েরর মাধ্যমে বর সমাজের কাছে ঋণী। এই ঋণ বা দায় শোধ করতে সে বাধ্য। খানা সিরানার মাধ্যমে সমাজের কাছে তার এ দায় শোধ হয়। বিয়ের সামর্থ অনুসারে একটি সামাজিক খানা দেওয়া এক প্রকার বাধ্যতামূলক। এর ব্যত্যয় ঘটলে সামাজিক দন্ডের বিধান আছে। বিয়েরর খানায় টক জাতীয় একটি তরকারি থাকে, যাকে চাকমা ভাষায় "খাদা" বলে। এ খাদা না হলে খানা সিরানার ব্যাপারটিই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। সেখানে ড্রিংকসেরর সাথে রান্না করা মাংস একটি মেজাংঙের উপর ঢাকনা দিয়ে সাজিয়ে বৃত্তাকারে রেখে সবাইকে প্রনাম করে আর্শিবাদ নিয়ে কর-কনেকে পরিবেশন করতে হয়। চাকমা সমাজে এরুপ অনুষ্ঠানকে বলে "গোজে দেনা"। এই খানা সিরানা বিবাহের অপরিহার্য অঙ্গ। এ বিবাহের সম্পর্কে সমাজের আর কোনো প্রকার আপত্তি বা দাবি থাকেনা। যারা বিয়ের খানা সিরানা পর্ব সমাপ্ত করেনা তাদের মৃত্য হলে সমাজের লোকেরা তাদের শ্বশানে নেওয়ার সময় কাঁধের নিচে করে নেওয়া হয়। কাঁধে তুলে নেয়না। বিয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরের দিন অথবা দ্বিতীয় দিন বর ও নববধূকে কনের পিতার বাড়ি যেতে হয়। এ যাওয়ার নাম "বিঝু ভাঙ্গা"। বিঝি ভাঙ্গা সম্পন্ন করা বিধেয়। তোনো কারণে কনের বাড়ি বিঝু ভাঙ্গা করতে না পারলে নিকটাত্মীয় কারও বাড়ি গিয়ে হলেও করতে কয়। তাও সম্ভব না হলে চির সবুজ ছায়াযুক্ত গাছের নিচে বসে বেষুত ভাঙ্গার কাজ সম্পন্ন করার বিধি রয়েছে। যথাসময়ে বিঝু ভাঙ্গার কাজ সম্পন্নের পর বরের বাড়ি গিয়ে"বুরপারার "কাজ সম্পন্ন করতে হয়। নির্দিষ্ট দিনে শুশুরালয়ে গমনের রীতি অনেকটা শিথিল হয়ে এসেছে।




ঘরজামাই প্রথাও প্রচলিত আছে চাকমা সমাজে। তবে এ ধরনের বিয়ে আড়ম্বরপূর্ণ হয় না এবং পাত্রের কাছে পাত্রীর কোনোধরনের কোনো কিছু দাকি থাকেনা। পুত্রসন্তানের আবর্তমানে পাত্রপক্ষেরর আর্থিক অসামর্থ্যের বা উপযুক্ত অভিভাবক না থাকার কারণে ঘরজামাই তোলা হয়।

চাকমাদের জুমচাষের একটি চিত্র। এভাবে চাকমারা কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা জুম চাষ করে আসছে জীবিকা নির্বাহের জন্য।

ছবিতে চাকমা রাজা ব্যারিষ্টার দেবাশিস রায় এবং যুবরাজ ত্রিভুবন আর্যদেব রায়।